এই ধরাধামে আগমন করার নয়টি ষ্টেশন।
জন্ম নেওয়ার তথা গঞ্জ্জাত হতে এই ধরাধামে আগমন করার নয়টি ষ্টেশন। গঞ্জে মুখফি, জামাদাত, নাবাদাত, হায়ানাত, নুতফা, আলক্বা, দায়রা, জনীন, তেফেলি।
১.গঞ্জে মুখফি (গঞ্জে জাত বা আলমে আরওয়া বা রূহের জগত)ঃ সমস্ত প্রাণীর আত্মা এখানেই ছিল, আবার এখানেই চলে যাবে মৃত্যুর পর।
২.জামাদাত (অর্থাৎ ধাতু বা জড়)ঃ এটা দ্বিতীয় স্ট্যাশন।
গঞ্জে মুখফি হতে কুশাকারে আত্মা পৃথিবীতে নেমে আসে (রূপক ব্যাখ্যা)।
৩.নাবাদাত (অর্থাৎ বৃক্ষ)ঃ কুয়াশাকারে নেমে এসে আত্মা কোনো বৃক্ষের উপর পতিত হয়।
৪.হায়ানাত (অর্থাৎ পশু)ঃ এটা চতুর্থ স্ট্যাশন।
সেই বৃক্ষ যে পুরুষ প্রাণী ভক্ষন করে, আত্মা তাঁর মস্তকে চলে যায় এবং সুপ্ত হয়ে থাকে।
৫. নোৎফা (অর্থাৎ মণি বা বীর্য)ঃ আত্মা সুপ্ত হয়ে মস্তকে বীর্যের মধ্যে অবস্থান করে।
যদি বৃক্ষ বা বৃক্ষের ফল মানুষ খায় তবে আত্মা মানুষের মস্তকে, আর যদি অন্য কোনো প্রাণীতে ভক্ষ করে, তবে আত্মা সেই প্রানীর মস্তকে চলে যায় (বাবার মস্তকে থাকে)।
৬.আলক্বা (অর্থাৎ জমাট বাধা রক্ত বা ঝুলে থাকা)ঃ তারপর বীর্য বাবার মস্তক থেকে মাতৃ রেহেম বা গর্ভাশয়ে নেমে এসে জমাট বাধা রক্তের গঠন ধারন করে। সূরা আলাকে ২য়য় আয়াতে এই বিষয়ে উল্লেখ করেছেন।
৭. জনীন (অপরিনত শেকেল)ঃ মানে অপরিনত দেহ। অর্থাৎ তখন দেহের আকার ধারন করে ঠিকই, কিন্তু পূর্ন হয় না।
৮.দায়রা (অর্থাৎ পূর্ন শেকেল)ঃ সবশেষে দেহ পূর্নতা লাভ করে একটি পূর্ন আকৃতি ধারন করে ২৮০ দিনে। মানে ৯ মাস দশ দিনে। অনেকেই দশ মাস দশ দিনের কথা বলে থাকে, সেটা ভুল তথ্য।
৯. তেফেলি ( এটার অর্থ শিশু। এখানে অর্থ হবে তেলেফি কামেল বা পূর্ন বিকাশ)ঃ অবশেষে প্রানী শিশু আকারে জন্ম গ্রহন করে পৃথিবীতে আসে।
আমরা আবার গঞ্জে মখফিতে ফিরে যাবো, এই দেহের অবসান ঘটলে আবারও আত্মারূপে সেখানেই ফিরে যাবে সবাই।
আবার এভাবেই ফিরে আসবে। এই আসা যাওয়াকেই অরূজ (উর্দ্ধাগমন) ও নুজুল (অবতারণ) বা ভাংগা-গড়া বলে। ভাংগা-গড়ার অবসানের জন্যেই ত জীবের সকল সাধনা। যখন সকল বাসনা ছেড়ে দিয়ে সাধনা বলে নির্বাণ লাভ করতে পারবে জীব, তখনই তার মুক্তি মিলবে।
No comments