আধ্যাত্বিক জীবনের দীক্ষাঃ
একদিন জোহরের নামাজের পর হযরত শাহ ছুফী সৈয়দ আবু শাহামা লাহোরী (রহঃ) তার মুরীদানদের নিয়ে নিজ হুজুরায় ধর্মালোচনা করছিলেন। ঠিক সে সময়েই হযরত আহমদ উল্লাহ মাইজভান্ডারী (কঃ) পাল্কীযোগে কোন এক অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য সেই ভবনের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলেন। হযরত লাহোরী (রহঃ) নিজ অর্জিত ‘লাল’ (আধ্যাত্বিক স্তর বিশেষ) অর্পণের জন্য দীর্ঘদিন যাবত উপযুক্ত শিষ্যের খোঁজে ছিলেন। তিনি কালবিলম্ব না করে আপন মুরীদ শাহ এনায়েত উল্লাহ সাহেব এর মাধ্যমে পাল্কী-আরোহী হযরত ক্বেবলাকে (কঃ) সাক্ষাতের আমন্ত্রণ জানালেন। হযরত ক্বেবলাও (কঃ) তার মাহফিলে যোগদানের কর্মসূচীর উপরে খোদায়ী রহস্য ও রহমতপূর্ণ এই বেলায়তী আমন্ত্রণকে প্রাধান্য দিয়ে তার আহবানে সাড়া দেন। হযরত আবু শাহামা মুহাম্মদ ছালেহ লাহোরী (রহঃ) হযরত ক্বেবলাকে (কঃ) সম্মানের সাথে অভ্যর্থনার পর নিজ তরিক্বতের বাইয়াত প্রদান করেন এবং তার জন্য খাস পানাহারের আয়োজন করেন। দেখতে দেখতে পাত্রপূর্ণ খাদ্য নিঃশেষ হলেও হযরত ক্বেবলার চাহিদা যেন মিটলো না, তিনি আরো পেতে আগ্রহী। কিন্তু তার পীরে ত্বরিক্বত মৃদু হেসে বললেন, ‘হে প্রিয়তম, আমার রান্না ঘরে আপনার জন্য রক্ষিত সবকিছুই পরিবেশন করা হয়েছে। এর অধিক প্রয়োজনে আপনি সহস্তে পাক করে খাবেন।’ এই রূপক বাক্যের মাধ্যমে পীরে ত্বরিক্বত হযরত আবু শাহমা (রহঃ) বুঝিয়ে দেন যে, তিনি হযরত আহমদ উল্লাহ মাইজভান্ডারীকে (কঃ) তার সমস্ত আধ্যাত্বিক নেয়ামত ও খোদায়ী শক্তি অর্পণ করেছেন।
আরো অধিক কামালিয়ত তথা আধ্যাত্বিক উচ্চাসন লাভের নিমিত্তে হযরত ক্বেবলাকে (কঃ) ‘নিজ হস্তে পাক করে’ তথা সাধনা ও রিয়াজতের মাধ্যমে অর্জন করতে হবে। এরপর সৈয়দ আহমদ উল্লাহ (কঃ) আপন পীরের তত্ত্বাবধানে নিজেকে আধ্যাত্বিক সাধনায় নিয়োজিত রাখেন। এই বিরল অথচ গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা থেকে আমরা একদিকে যুগপৎ ভাবে পীর ও মুরীদ-হযরত আবু শাহমা (রহঃ) ও হযরত আহমদ উল্লাহ (কঃ) এর আধ্যাত্বিক উচ্চাসনের বিষয়টি যেমন জানতে পারি তেমনি ত্বরিক্বত চর্চা ও আধ্যাত্বিক জগতে সফলতার জন্য হক্কানী পীরের হাতে বাইয়াত গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা ও তার তত্ত্বাবধানে আধ্যাত্বিক সাধনার গুরূত্বও সমভাবে উপলদ্ধি করতে পারি।
No comments