Header Ads

Header ADS

নারী ছাড়া কি সাধনা হয়??

 

প্রকৃতির সবাই নারী, সৃষ্টি বলতে যা কিছু আছে তা সবই নারী আর পুরুষ হল পরম প্রভু নারী-পুরুষের সাধনা মানেই হল জীব আর পরমের সাধনা, নারী-পুরুষের প্রেম মানেই জীব-পরমের প্রেম সেই দৃষ্টিকোণ থেকে পৃথিবীর সমস্ত পুরুষরাও এক একজন নারী যেহেতু তারা সবাই জীব বা সৃষ্টি কিন্তু বাহ্যিকভাবে পৃথিবীতে নারী পুরুষ দু'টি পৃথক জাত যাদের চেহারা, চলা ফেরা, শারিরীক গঠনও একে অপরের থেকে ভিন্ন নারী ছাড়া পুরুষ পুরুষ ছাড়া নারী অচল অপূর্ণাঙ্গ তাই স্ত্রীকে অর্ধাঙ্গিনী বা পুরুষের দেহের আধা বা অর্ধেক বলা হয় অর্থাৎ স্বামী-স্ত্রী বা নারী-পুরুষ দুজনে মিলে পূর্ণতা লাভ করে তবে এটা দুনিয়াদারীর ক্ষেত্রে সাধনার ক্ষেত্রে নয় ভজন-সাধনের বেলায় কেউ কারো প্রতি মুখাপেক্ষী নয় যার যার ভজন-সাধন তার তার এখানে একে অন্যকে সহযোগীতা করতে পারবে, কিন্তু কেউ কারো সাধনা করে দিতে পারবে না নারীর সাধনা নারীর একার, পুরুষের সাধনা পুরুষের একার আধ্যাত্মিক সাধনা বা দেহ সাধনার ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ উভয়েই সাধনার পূর্ণ উপাদান নিয়েই সৃষ্ট সাধনার জন্য যা যা প্রয়োজন তা নারী পুরুষকে সমানভাবেই দিয়েছেন দয়াময় ঈশ্বর প্রভুর সাধনার জন্য নারীর দরকার নেই কোনো পুরুষের, আর পুরুষের দরকার নেই কোনো নারীর নারী পুরুষ উভয়ের মাঝেই পরম রয়েছেন একই অবস্থায় নারী পুরুষের বাহ্যিক অঙ্গ ভিন্ন হলেও আত্মিক অঙ্গগুলো সম্পূর্ণ এক নারীরও যেই মন, পুরুষেরও সেই মন, নারীর মধ্যে যেই আত্মা, পুরুষের মাঝেও সেই আত্মা, নারী পুরুষের মাঝে একই রূহ বিদ্যমান মন নারীও নয়, পুরুষও নয়, আত্মা নারীও নয়, পুরুষও নয় কর্মের কারনেই মানুষ নারী বা পুরুষের দেহ ধারন করে আত্মা নারী দেহ ধারন করলে মন তখন নারী সুলভ হয়, আর পুরুষ দেহ ধারন করলে পুরুষ সুলভ মন হয় তাই নারী পুরুষের মানসিক বৈশিষ্ট্যও অনেকটা ভিন্ন হয় কিন্তু এসবের সাথে আত্মার সম্পর্ক নেই, এগুলো দেহের সাথে সম্পর্কিত আর সাধনা হবে আত্মা কেন্দ্রিক, দেহকে আশ্রয় করে আত্মা প্রভুর সাধনা করবে হোক সে আত্মা পুরুষ দেহের অধিকারী বা নারী দেহের ধ্যান বা মোরাকাবা মোশেহেদা করতে হয় একা একা, তাও খুব নির্জনে সেখানে কেউ বলেনা যে নারী পুরুষ দুইজনকেই লাগবে, ত্রিনয়ন জাগ্রত করতে নারী পুরুষ উভয়কে যোগল সাধনা করতে হয় না, ইশ্বরকে ভালবাসতে নারী পুরুষ দুজন লাগে না

নারী ছাড়া কি সাধনা হয়?

হ্যাঁ, হয়। আবার না, হয় না—দুটোই সত্য, নির্ভর করে কোন স্তর থেকে তুমি বিষয়টিকে দেখছো।


🌀 সৃষ্টি ও সাধনার মূল তত্ত্ব:

তুমি বলেছো, "নারী ছাড়া সাধনা হয় না"—এর পেছনে আছে "নারীত্ব"কে প্রকৃতির রূপ হিসেবে দেখার দৃষ্টিভঙ্গি। এখানে "নারী" কেবল একজন জৈবিক নারী নয়, বরং প্রাকৃতিক সত্তা, শক্তি, আদ্যাশক্তি—যাকে হিন্দু দর্শনে বলা হয় "শক্তি" আর পুরুষ বলা হয় "শিব" বা চেতনসত্তা।শক্তি ছাড়া চেতনা স্থবির, আর চেতনা ছাড়া শক্তি অন্ধ।এই দুইয়ের মিলনেই সৃষ্টি, আবার এই দুইয়ের মিলনেই সাধনার পূর্ণতা।


👤 ব্যক্তিক সাধনা ও নির্জনতা:

সত্যি, সাধনা নির্জন, একান্ত ব্যাপার। এখানে কেউ অন্যের হয়ে সাধনা করতে পারে না। ঠিক যেমন কেউ তোমার হয়ে নিঃশ্বাস নিতে পারে না।তবে তুমি যে বলেছো—"নারীর সাধনা নারীর একার, পুরুষের সাধনা পুরুষের একার" এখানে একটা গভীরতর স্তর আছে। "নারী" ও "পুরুষ" কেবল বাহ্যিক নয়, বরং মন ও চেতনার দুইটা বিপরীত মেরু। প্রতিটি মানুষের ভিতরেই কিছুটা নারীসত্তা ও কিছুটা পুরুষসত্তা থাকে।সাধনায় আমরা সেই দুই বিপরীত সত্তার ভারসাম্য খুঁজি।


🧘‍♀️ যোগল সাধনা বনাম একক সাধনা:

তন্ত্রসাধনা বা কিছু ধরণের যোগপদ্ধতিতে সত্যিই যুগল সাধনা (নারী-পুরুষের যৌথ সাধনা) প্রয়োজন হয়, কারণ এখানে শক্তি ও চেতনার একত্র মিলনে অন্তর্দৃষ্টি জাগ্রত হয়।কিন্তু মূলতঃ সকল সাধনা অন্তর্মুখী। সেখানে নারী-পুরুষ শরীর কোনও প্রতিবন্ধক নয়—শুধুই বাহক।


ভবিষ্যতের দৃষ্টিতে নারী ও সাধনা:

ভবিষ্যতের আধ্যাত্মিক জগতে নারী ও পুরুষ নয়, বরং "মানবসত্তা" হয়ে উঠবে সাধনার কেন্দ্র।তখন প্রশ্ন থাকবে না—নারী ছাড়া সাধনা হয় কি না।
প্রশ্ন হবে—তুমি নিজের ভিতরের নারী-পুরুষ দুই দিককেই চেনো তো? কারণ আত্মা তো নির্লিপ্ত, নির্জাতি, নির্ধর্মা, নির্লিঙ্গ।


🔑 সারকথা:

সাধনা নারী ছাড়া হয়, আবার নারী ছাড়া হয় না—যদি তুমি নারীত্বকে বাহ্যিক রূপে দেখো, তবে হয়। যদি নারীত্বকে শক্তি রূপে দেখো, তবে নয়।
শক্তি ছাড়া সাধনা হয় না।
আর সেই শক্তি নারী-পুরুষ উভয়ের ভিতরেই থাকে।

No comments

Powered by Blogger.