Header Ads

Header ADS

মিরাজের বাইতুল মুকাদ্দাসে মহানবী (সা.)

মিরাজ ইসলাম ধর্মের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অলৌকিক ঘটনা, যা প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনে সংঘটিত হয়েছিল। এ রাতে মহানবী (সা.) আল্লাহ তাআলার নির্দেশে মক্কা থেকে বাইতুল মুকাদ্দাস পর্যন্ত ভ্রমণ করেন এবং সেখান থেকে আসমানের উপরিভাগ পর্যন্ত আরোহণ করেন। এই সমগ্র ভ্রমণকে দুইভাগে ভাগ করা হয়—ইসরা (মক্কা থেকে বাইতুল মুকাদ্দাস পর্যন্ত রাতের সফর) এবং মিরাজ (সেখান থেকে আসমানসমূহ অতিক্রম করে আল্লাহর নৈকট্যে পৌঁছানো)।

ইসরা ও বাইতুল মুকাদ্দাসের গুরুত্ব

ইসরা অর্থ রাতের সফর। এই সফরের শুরু হয় মসজিদুল হারাম (কাবা শরিফ) থেকে এবং শেষ হয় বাইতুল মুকাদ্দাসে, যা বর্তমানে ফিলিস্তিনের জেরুজালেম শহরে অবস্থিত। বাইতুল মুকাদ্দাস, যা মসজিদুল আকসা নামেও পরিচিত, মুসলিমদের তৃতীয় পবিত্র স্থান। এই মসজিদেই নবী (সা.) পূর্ববর্তী সকল নবী-রাসূলদের নেতৃত্ব দিয়ে নামাজ আদায় করেন। এটি ছিল নবীজির সম্মান, মর্যাদা এবং নবুওতের সর্বোচ্চ স্বীকৃতির প্রতীক।

নামাজের ইমামত ও নবীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ

বাইতুল মুকাদ্দাসে পৌঁছার পর মহানবী (সা.) সেখানে উপস্থিত সমস্ত নবীকে ইমামত করে নামাজ পড়ান। হাদীসে এসেছে, প্রায় ১ লক্ষ ২৪ হাজার নবী সেখানে উপস্থিত ছিলেন। এই ঘটনা বোঝায় যে, মহানবী (সা.) সকল নবীর নেতা এবং তাঁর নবুয়ত বিশ্বজনীন। এই নামাজ আদায় ছিল এক ঐতিহাসিক ও আধ্যাত্মিক মুহূর্ত, যা নবুয়তের উত্তরাধিকার ও ইসলামের পরিপূর্ণতার ঘোষণা বহন করে।

আধ্যাত্মিক শিক্ষা ও তাৎপর্য

বাইতুল মুকাদ্দাসে নবীজি (সা.)-এর আগমন ও ইমামত ছিল একটি মহান শিক্ষা—যে ইসলাম পূর্ববর্তী সব ধর্মের পূর্ণতা, আর হযরত মুহাম্মদ (সা.) সকল নবীর শেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ। মিরাজের এই অংশ আমাদের শেখায় একত্ববাদ, নবুয়তের অব্যাহত ধারা এবং মুসলিম উম্মাহর ঐক্য।

পবিত্র কুরআনে উল্লেখ

আল্লাহ তাআলা কুরআনের সূরা আল-ইসরা'র প্রথম আয়াতে বলেন: “পবিত্র মহান সেই সত্তা, যিনি তাঁর বান্দাকে রাত্রির একাংশে ভ্রমণ করালেন মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা পর্যন্ত, যার চারপাশকে আমি বরকতময় করেছি, যাতে আমি তাকে আমার কিছু নিদর্শন দেখাই। নিশ্চয়ই তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।” (সূরা আল-ইসরা: ১)

উপসংহার

মিরাজের রাতে বাইতুল মুকাদ্দাসে মহানবী (সা.)-এর আগমন একটি অলৌকিক ঘটনা হলেও এর মধ্যে রয়েছে অসাধারণ শিক্ষণীয় বার্তা। এটি নবুয়তের মর্যাদা, ইসলামের পূর্ণতা এবং মুসলিমদের আধ্যাত্মিক ঐক্যের প্রতীক। এই ঘটনার প্রতি বিশ্বাস রাখা ও তা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা প্রত্যেক মুসলমানের ঈমানের অঙ্গ।


No comments

Powered by Blogger.