Header Ads

Header ADS

মেরাজ থেকে ফেরার পর মহানবী সা.-কে কুরাইশদের প্রশ্ন

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মেরাজ থেকে ফিরে মক্কাবাসীকে এ ঘটনা জানানোর পর কুরাইশরা ব্যাপক অবাক ও সন্দেহে পড়ে যায়। কারণ তাঁদের দৃষ্টিতে এত স্বল্প সময়ে মক্কা থেকে বায়তুল মুকাদ্দাস এবং আকাশ ভ্রমণ সম্ভব ছিল না। তখন তাঁরা মহানবী (সা.)-কে বিভিন্ন প্রশ্ন করতে থাকে, যাতে তাঁরা তাঁর বক্তব্যকে মিথ্যা প্রমাণ করতে পারে।

কুরাইশদের প্রশ্নসমূহ ও প্রতিক্রিয়া:

১. বায়তুল মুকাদ্দাস সম্পর্কে প্রশ্ন:

কুরাইশরা চ্যালেঞ্জ করে বলল, “যদি তুমি সেখানে গিয়ে থাকো, তাহলে আমাদের বায়তুল মুকাদ্দাস সম্পর্কে বিস্তারিত বলো।”

মহানবী (সা.) বলেন, “আমি এমন অবস্থায় পড়ে গেলাম যে, আমি কোনো দিন এত বিপদে পড়িনি। তারা আমাকে এমন এমন জিনিস জিজ্ঞেস করল যা আমার মনে ছিল না...।” – (সহীহ মুসলিম)

তখন আল্লাহ তাআলা বায়তুল মুকাদ্দাস তাঁর সামনে দৃশ্যমান করে দেন। রাসুল (সা.) তাকিয়ে তাকিয়ে সব বর্ণনা দেন—দরজা, জানালা, স্তম্ভ সবকিছুর।

২. কারও সাথে দেখা হয়েছে কি না?

তাঁরা প্রশ্ন করে—“পথে কী কারও সাথে দেখা হয়েছিল?” মহানবী (সা.) বলেন—"আমি অমুক অমুক কাফেলার পাশে গিয়েছিলাম, তাদের একটি উট হারিয়ে গিয়েছিল, আমি বলে দিয়েছিলাম কোথায় আছে।"

তিনি এও বলেন, "তারা অমুক দিনে মক্কায় প্রবেশ করবে।" — এবং বাস্তবেই তা ঘটে যায়।

৩. আকাশ ভ্রমণের কথা শোনে ব্যঙ্গবিদ্রুপ:

তাঁরা বলে: “তুমি কি বলছ—একই রাতে মক্কা থেকে বায়তুল মুকাদ্দাস এবং আকাশ ভ্রমণ করে এসেছ?” তাদের অনেকেই ঠাট্টা করে হাত তালি দিতে থাকে।

আবু বকর (রাঃ)-এর প্রতিক্রিয়া: এই ঘটনায় যখন কুরাইশরা আবু বকর (রাঃ)-কে গিয়ে বলল, “তোমার বন্ধু তো বলছে এক রাতে আকাশ ভ্রমণ করেছে!”

আবু বকর (রাঃ) বললেন: “যদি তিনি এ কথা বলে থাকেন, তাহলে অবশ্যই সত্য বলেছেন। আমি তো এর চেয়ে বেশি বিস্ময়কর কথা বিশ্বাস করি—যখন তিনি বলেন, ফেরেশতা তাঁর কাছে নাজিল হয়।” এ জন্যই তাঁকে "আস-সিদ্দীক" উপাধি দেওয়া হয়।

(তাফরিরে মাআরিফুল কোরআন, ৫ম-খণ্ড, ৪৩৩, তাফসিরে ইবনে কাসির, ১৩-খণ্ড, ২৬৭)

উপসংহার:

মেরাজের ঘটনা ছিল ঈমানের একটি বিশাল পরীক্ষা। কুরাইশরা যুক্তি-তর্ক ও চ্যালেঞ্জের মাধ্যমে রাসুল (সা.)-কে মিথ্যা প্রমাণ করতে চাইলেও, আল্লাহ তাঁর নবীকে সাহায্য করেন এবং সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করেন।


No comments

Powered by Blogger.