মিরাজের চতুর্থ, পঞ্চম ও ষষ্ঠ ও শেষ আসমানে নবীজি
ইসরা ও মিরাজের রাতে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর আদেশে জিবরাঈল (আ.)-এর সাথে সাত আসমান অতিক্রম করেন। প্রতিটি আসমানে তিনি বিভিন্ন নবীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এতে একদিকে নবীজির মর্যাদা স্পষ্ট হয়, অন্যদিকে উম্মতের জন্য রয়েছে মহান শিক্ষা।
চতুর্থ আসমানে
🔹 সাক্ষাৎ হয়: হযরত ইদ্রিস (আ.)-এর সঙ্গে
🔸 তিনি সেই নবী যাঁকে আল্লাহ “উচ্চ মর্যাদায় উত্তোলিত করেছেন” (সূরা মরিয়ম: ৫৭)
🔹 হাদীসে বলা হয়েছে, তিনি জান্নাতে অবস্থান করছেন।
এই স্তরে নবীজির শিক্ষা: ইদ্রিস (আ.)-এর ধৈর্য, চিন্তা ও আধ্যাত্মিক উন্নতি অনুসরণযোগ্য।
পঞ্চম আসমানে
🔹 সাক্ষাৎ হয়: হযরত হারুন (আ.)-এর সঙ্গে
🔸 তিনি হযরত মূসা (আ.)-এর ভাই ও সহকারী ছিলেন।
🔹 নবীজি (সা.) তাঁকে দেখতে পান একজন সম্মানিত ব্যক্তি হিসেবে, যাকে তাঁর কওম ভালোবাসত।
এই স্তরে নবীজির শিক্ষা: নেতৃত্ব ও দায়িত্ব পালনে কোমলতা ও আল্লাহর উপর ভরসার শিক্ষা।
ষষ্ঠ আসমানে
🔹 সাক্ষাৎ হয়: হযরত মূসা (আ.)-এর সঙ্গে
🔸 তিনি ছিলেন বনী ইসরাঈলের এক মহাপ্রতিভাবান রাসূল, যাঁর মাধ্যমে তাওরাত নাযিল হয়।
🔹 নবীজি (সা.)-কে দেখে তিনি কেঁদে ফেলেন এবং বলেন, “একজন নবী এলেন, যাঁর উম্মত আমার উম্মতের চেয়ে বেশি জান্নাতে যাবে!”
এই স্তরে নবীজির শিক্ষা: হিংসা নয়, বরং ঈমান ও আন্তরিকতা দিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সৌন্দর্য প্রকাশ।
সপ্তম ও সর্বশেষ আসমান
🔹 সাক্ষাৎ হয়: হযরত ইব্রাহিম (আ.)-এর সঙ্গে
🔸 তিনি ছিলেন “খলিলুল্লাহ” — আল্লাহর অন্তরঙ্গ বন্ধু
🔹 তিনি বাইতুল মামুরে পিঠ ঠেকিয়ে বসা ছিলেন (এই ঘর কা’বার উপরের আসমানে ফেরেশতাদের তাওয়াফস্থল)
🔸 তিনি নবীজি (সা.)-কে বলেন: “তোমার উম্মতের জান্নাতের ভূমি খুবই সুন্দর। তাদেরকে বলো—জান্নাতে বেশি বেশি গাছ রোপণ করুক, আর সেটা হলো ‘সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আল্লাহু আকবার।’”
এই স্তরে নবীজির শিক্ষা: জান্নাতের বাগান সাজানো হয় দুনিয়ার যিকিরের মাধ্যমে।
উপসংহার
মিরাজের এই মহান সফরের প্রতিটি আসমানে নবীজির সাক্ষাৎ শুধু একটি ঐতিহাসিক ঘটনা নয়, বরং তা আমাদের জন্য শিক্ষা, অনুপ্রেরণা ও আত্মিক উন্নতির পথপ্রদর্শক। চতুর্থ থেকে সপ্তম আসমানে নবীদের সাক্ষাৎ — তা নবীজির (সা.) মর্যাদা ও উম্মতের দায়িত্ব স্মরণ করিয়ে দেয়।
এরপর চললেন চতুর্থ আসমানের দিকে। সেখানেও পূর্বের মতো জিজ্ঞাসাবাদ করা হলো। স্বাগত-সম্মান জানানো হলো। সেখানে হযরত ইদরীস (আ.)-এর সাথে সাক্ষাৎ হলো। সালাম ও কুশল বিনিময় হলো। হযরত ইদরীস (আ.) নবীজির জন্য দোয়া করলেন।
এরপর চললেন পঞ্চম আসমানের দিকে। সেখানে হযরত হারূন (আ.)-এর সাথে সাক্ষাৎ হলো।
এরপর চললেন ষষ্ঠ আসমানের দিকে। সেখানেও পূর্বের পর্বগুলোর মতো জিজ্ঞাসা করা হলো। নবীজিকে অভিনন্দন জানানো হলো। সেখানে দেখা হলো হযরত মূসা আ.-এর সাথে। হযরত মূসা আ. নবীজিকে খুব ইস্তেকবাল করলেন।
No comments