সংক্ষিপ্তকারে ইবলিশের পরিচয়:-
সংক্ষিপ্তকারে ইবলিশের পরিচয়:-
হযরত আজাজিল আ: থেকে লানত প্রাপ্ত হয়ে ইবলিশ হওয়া। জিনদের পঞ্চম বারের পয়গাম্বর ও বাদশাহ হামুসের পুত্রছিল আজাজিলের জনক। তার নাম ছিল খবীস। খবীসের আকৃতি ছিল ভয়ঙ্কর এক সিংহের ন্যায়। তার স্বভাব প্রকৃতি ও সিংহের ন্যায়ই ছিল। একদিকে তার দেহে ছিল পঞ্চ শক্তি অন্যদিকে তার চেহারায় ছিল সুস্পষ্ট ধূর্ততার ছাপ। এ খবীসই ছিল পাপীষ্ঠ জিনদের মাথার তাজ। আজাজিলের মাতা ছিল জিন জাতির পঞ্চম নেতা হামুসের কণ্যা। তার নাম ছিল নিলবিস। নিলবিস জিন দেখতে ঠিক একটি নেকড়ে বাঘের মত। তার প্রকৃতি ও ছিল অবিকল নেকড়ের ন্যায়। এক বর্ণনায় আছে, জাহান্নামের আগুনের খবিস ও নিলবিসের মিলনে ইবলীসের জন্ম হয়।সুতরাং পিতা মাতাও জাহান্নাম এই ত্রিস্বত্তার স্বভাব ও প্রকৃতির সম্পূর্ণ প্রভাবই আজাজিলের চরিত্রে নিহিত ছিল। আজাজিলের পিতার সারবুক নামে সর্ব বিদ্যায় পারদর্শী একজন বন্ধু ছিল। সে যাই হোক মূল কথায় ফিরে যাই।
হযরত আজাজিল (আ:) তখনও তিনি লানত প্রাপ্ত হন নাই।আল্লাহর ইবাদত করতে করতে কখনও হয়েছিলেন আবেদ–কখনও ওলী –কখন ও ছালেহ এসবের বিণিময়ে পবিত্র লাওহে মাহফুজ দর্শন করার সৌভাগ্য লাভ করে ছিলেন। এরপর আজাজিল লা-মোকাম পর্য্ন্ত যাওয়ার ইচ্ছা ব্যক্ত করেছিলেন কিন্তু তার ভাগ্যে আরতা জুটল না। কারণ আজাজিল লা-মোকাম পর্য্ন্ত পৌঁছে গেলে আল্লাহর আদম সৃষ্টির রহস্য হয়ত বা আজাজিল বুঝে যেত। তাই আজাজিলের পক্ষে লা-মোকাম পর্য্ন্ত পৌঁছা আর সম্ভব হয় নাই।
যখন ফেরেশতারা হযরত আজাজিল আ: সহ লাওহে মাহফুজ পরিদর্শনে যান,তখন লাওহে মাহফুজে এরুপ লেখা দেখতে পান যে, অচিরেই আমার জনৈক বান্দার উপরে চিরদিনের জন্য আমার ”লানত ” বর্ষিত হবে। এ লেখা পড়ে ফেরেশতারা ভয়ে অস্থির হয়ে পড়ল। তারা ভয়ে থর থর করে কাঁপতে লাগল। তারা সঙ্কিত হয়ে পড়ল। হায়! না জানি তাদের মধ্যেই কোন হত ভাগ্য বান্দার উপরে এদুর্ভাগ্য নেমে আসবে। ফেরেশতারা এদুশ্চিন্তায় কেঁদে কেঁদেহয়রান ও পেরেশান হয়ে সকলে মিলে তাদের ওস্তাদ হযরত আজাজিল আ: এর নিকট উপস্থিত হল।হযরত আজাজিল আ: ফেরেশতাদের কাঁদা ও পেরেশান হওয়ার কারণ জানতে চাইলে ফেরেশতারা বলল ওস্তাদ ! ঐ যে পড়ে দেখুন, লাওহে মাহফুজে কি লেখা আছে! আমরা এ লেখা পড়ে আমাদের সকলের মনে দারুন ভিতী সৃষ্টি হয়েছে। আপনি আল্লাহর খুবই প্রিয় বান্দা তাই আল্লাহর কাছে আমাদের জন্য একটু দোয়া করুণ,যাতে আমরা আল্লাহর লানত থেকে রক্ষা পেতে পারি। হযরত আজাজিল ফেরেশতাদের মিনতীতে তাচ্ছিল্যের সাথে মুচকী হাসি দিয়ে আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করলেন,হে মাবুদ! তোমার নিকট আমার ফরিয়াদ তুমি ফেরেশতাদের কারো উপর লানত দিওনা। আল্লাহতা’আলা আজাজিলের ঐ প্রার্থনা কবূল করলেন। সকল ফেরেশতা সেই নির্ধারিত গজব থেকে রক্ষা পেল। কিন্তু আজাজিল সমগ্র ফেরেশতাদের জন্য দোয়া করলেন বটে কিন্তু অহংকার বশতঃনিজের জন্য দোয়া করতে ভুলেই গেলেন। এর কিছুদিন পর একদিন আজাজিল আরশ মুআল্লার একখানা তখতির উপরে উজ্জ্বল নূরের হরফে ‘আউ’যুবিল্লা’হিমিনাশ শাইতোয়া-নির রাজীম-অর্থাৎ‘বিতাড়িত শয়তান হতে আল্লাহ নিকট সাহায্য প্রার্থনা করছি’ লিখিত দেখতে পেলেন। এ লেখা পাঠ করে আজাজিল অত্যন্ত বিস্মিত হয়ে আল্লাহর নিকট জিজ্ঞেসা করল, হে মাবুদ! কে সেই দুষ্ট পাপিষ্ঠ শয়তান যাহার নিকট হতে রক্ষা পাওয়ার জন্য তোমার কাছে প্রার্থনা করার কথা লেখা রয়েছে? হযরত আজাজিল বলল: হে মাবুদ তুমি আমায় সেই শয়তানকে দেখিয়ে দাও? আমি তাকে উপুক্ত শিক্ষা দান করি, যাতে সে গোমরাহী পথ থেকে ফিরে আসে। তখন জবাবে আল্লাহপাক আজাজিলকে বললেন,তুমি অচিরেই তাকে দেখতে পাবে। একথা শুনে আজাজিল সেখানে দাঁড়িয়ে এক হাজার বছর পর্যন্ত পাঠ করল,”লা আনাতুল্লা-হি ‘আলা ইবলীস’ ইবলীসের উপর আল্লাহর লানত বর্ষিতহ উক।
No comments